বাংলাদেশ | শুক্রবার, ডিসেম্বর ৬, ২০২৪ | ২১ অগ্রহায়ণ,১৪৩১

অর্থনীতি

07-02-2018 11:06:56 AM

অর্থনীতি ধ্বংসের রাজনীতি চান না ব্যবসায়ীরা

newsImg

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাঠে থাকার তোড়জোড়ের প্রেক্ষাপটে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা মনে করছেন, অর্থনীতি ও মানুষের নিরাপত্তায় বিঘ্নিত হয়—এমন রাজনীতি কেউ আর করবেন না। এ ছাড়া রাজনীতি ও আদালতকে এক করে না ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

রায়ের দিনের পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা এই আহ্বান জানান।

দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, দেশের রাজনীতি সুষ্ঠুধারায় ফিরে এসেছে। এতে রাজনৈতিক নেতাদের অনেক অবদান আছে। রাজনীতি তো সাধারণ জনগণের জন্য। তিনি মনে করেন, ২০১৩ সালের পর রাজনীতির গুণগত মানের উন্নতি হয়েছে। মানুষ এখন আর জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি পছন্দ করে না।

শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া জানাতে বর্তমানে অনেক মাধ্যম রয়েছে। ফলে আমার বিশ্বাস, নিয়মতান্ত্রিক মাধ্যমেই সবাই প্রতিক্রিয়া দেখাবে। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায় নিয়ে কোনো সংঘাত হবে না বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআইয়ের এই নেতা। তিনি মনে করেন, রাজনীতির জায়গায় রাজনীতি এবং আদালতের জায়গায় আদালত থাকবে। সুষ্ঠু রাজনীতি প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে বেশ ঝড় উঠেছে। কিন্তু পর্যটকরা তার কিছুই বুঝতে পারেনি। আমরাও শান্তিপূর্ণ রাজনীতি চাই, যেন দেশের অর্থনীতিতে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে।’

তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানও সংঘাতের কর্মসূচি পরিত্যাগ করার পক্ষে তাঁর দৃঢ় মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের আইন তার নিজস্ব নিয়মে চলবে। সুনাগরিক হিসেবে আমরা আইনকে সম্মান করি। আমি আশা করি, ৮ ফেব্রুয়ারিকে নিয়ে দেশে যে সংঘাত ও সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে তা হবে না। এমন কোনো অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হবে না, যাতে সংঘর্ষ বা সংঘাতের মতো পরিবেশ হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশের ৪৪ লাখ শ্রমিকের জীবন-জীবিকা তৈরি পোশাক খাতকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। তাদের জীবিকা রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে ব্যাহত হবে, তাদের ওপর কোনো হামলা হবে—এটা আমরা মনে করি না। কেননা রাজনীতি দেশের মানুষের জন্য। কোনো রাজনৈতিক দলই তার জনগণের অমঙ্গল চায় না—এটাই আমরা ভাবি।’

বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আন্দোলনের নামে আদালতের বিষয়কে রাস্তায় নামিয়ে আনা কোনোভাবেই উচিত নয়। একই সঙ্গে রাজনৈতিক ধরপাকড়, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ফলে বিদেশি ক্রেতারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। এর ফলে ইতিমধ্যে ক্রেতারা চলে গেছেন। তাই আমি মনে করি, পৃথিবীর অনেক দেশেই বিচারের সাজা হয়, এসব সাজা নিয়ে উচ্চ আদালতে যায় মানুষ। আমাদেরও উচ্চ আদালত আছে। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা এসব মামলা নিয়ে উচ্চ আদালতেই ফয়সালার জন্য যাবেন—এটাই প্রত্যাশা।’

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় সংঘাত ও সংঘর্ষ—এসব সাধারণ ঘটনা। আর এর চেয়ে বড় বড় সংকটের মুহূর্ত দেশের মানুষ মোকাবেলা করেছে। তবে এবার খুব একটা কিছু হবে বলে আমরা মনে করি না। কেননা পাঁচ বছর ধরে এ ধরনের সংস্কৃতি থেকে দেশের মানুষ বের হয়ে এসেছে। কারণ মানুষ এসব এখন আর সমর্থন করে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পরিবহনব্যবস্থা নিয়ে আমরা কিছুটা শঙ্কিত হলেও এগুলোকেও আমরা এখন প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে এসেছি। ফলে কোনো ধরনের সংকটের আশঙ্কা করছি না।’

খবরটি সংগ্রহ করেনঃ- i-news24
এই খবরটি মোট ( 7855 ) বার পড়া হয়েছে।
add

Share This With Your Friends