21-01-2018 10:18:57 AM
দীর্ঘদিন ধরেই অভিনয়ের মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। নাটক-টেলিছবি, টিভিসির পাশাপাশি তিনি বাজিমাত করেছেন চলচ্চিত্রেও। সর্বশেষ ‘ডুব’ ও ‘হালদা’ ছবিতে তিশার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। নতুন করে তিনি কাজ করছেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ নামের ছবিতে।
নতুন বছরেই তিনি এ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে ব্যস্ততার খাতা খুললেন। এরই মাঝে নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হলেন কলকাতার নির্মাতা অরিন্দম শীলের ‘বালিঘর’ ছবিতে। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই ছবিটি নিয়ে আজ শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত হলো প্রযোজকদের সমঝোতা স্বাক্ষর পর্ব। সেখানেই i-নিউজের মুখোমুখি হলেন তিশা। জানালেন ‘বালিঘর’ নিয়ে তার অনুভূতি-প্রত্যাশা, বর্তমান ব্যস্ততার নানা কথা। লিখেছেন লিমন আহমেদ-
তিশা : তার আগে আমি বেঙ্গল ক্রিয়েশনসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের চমৎকার এ আয়োজনটির সঙ্গে আমাকে সম্পৃক্ত করায়। বেঙ্গল দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে শিল্পচর্চায় অনিন্দ্য এক নাম। তাদের প্রযোজনার ছবিতে কাজ করতে পারছি ভেবে ভালো লাগছে। আর অরিন্দম শীল বর্তমানে বাংলা সিনেমা যারা খুব ভালো বানাচ্ছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। তার সঙ্গে কাজ করতে পারাটাও দারুণ একটি ব্যাপার। অরিন্দম শীলের সঙ্গে অনেক আগে থেকেই পরিচয় ছিল। নানা কারণে তার সঙ্গে কাজ করা হয়নি। পরিচয়ের সূত্র ধরেই তিনি আমাকে কাজ করতে বললেন। আমিও সুযোগটি পেলাম।
i-news : এর আগেও আপনি যৌথ প্রযোজনার ছবিতে কাজ করেছেন। ‘বালিঘর’ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?
তিশা : এর আগে আমি ‘ডুব’ নামের একটি ছবিতে কাজ করেছি। পাশাপাশি ‘হলুদবনি’ নামের একটি ছবিতেও কাজ শেষ করেছি। অলরেডি এটা ষাট ভাগ কাজ শেষ। বাকি শুট ফেব্রুয়ারিতে হবে। ‘ডুব’ ছবিতে প্রশংসা, ‘হলুদবনি’-তে ভালো কাজের প্রেক্ষিতে ‘বালিঘর’ নিয়েও আমার অনেক প্রত্যাশা। এ ছবিটি দিয়ে কলকাতার নির্মাতা হিসেবে অরিন্দম শীল আমার দ্বিতীয় পরিচালক। তার নির্মাণের মুন্সিয়ানা তো থাকবেই। প্লাস ভালো বাজেট, ভালো গল্প, দুই বাংলার দক্ষ সব শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করবো। এখানে ভালো মিউজিকও থাকবে। সব মিলিয়ে আশা করছি দারুণ একটা ছবি হবে।
i-news : এ ছবিতে আপনার চরিত্রটি কেমন?
তিশা : চরিত্র নিয়ে ডিটেইলস এখনই কিছু বলতে চাই না। এর চমকটা হলে এসেই দেখবেন দর্শক। তবে এখানে আমার চরিত্রটির নাম বন্দনা। ইন্টারেস্টিং চরিত্র। ইমোশন আছে, অদ্ভুত কিছু দৃশ্য আছে যা সবার ভালো লাগবে। ‘বালিঘর’র প্রতিটি চরিত্রই অসাধারণ।
i-news : অনেক সময়ই দেখা যায় চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে শিল্পীরা নানা রকম প্রস্তুতি নেন। বন্দনার জন্য বিশেষ কোনো প্রস্তুতি থাকছে?
তিশা : প্রতিটি চরিত্রের জন্যই একজন অভিনয় শিল্পীকে প্রস্তুতি নিতে হয়। এ চরিত্রটির জন্য হয়তো আমাকে বাহ্যিক কোনো প্রস্তুতি বা পরিবর্তনে যেতে হবে না। তবে মানসিক প্রস্তুতিটা তো থাকেই। আমি প্রতিটি চরিত্রে কাজ করার আগে চেষ্টা করি নিজেকে পরিপূর্ণরুপে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে। চরিত্রদের ভেতরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি। আর পরিচালকের নির্দেশনা তো থাকেই।
i-news : হলুদবনি ছবিটা সম্পর্কে জানতে চাই....
তিশা : চমৎকার একটি ছবি হতে যাচ্ছে ‘হলুদবনি’। বাংলাদেশের ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রাইভেট লিমিটেড ও ভারতের টেলিসিনে অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড হলুদবনি সিনেমার যৌথ প্রযোজক। ভারতের অংশে নির্মাতা মুকুল রায় চৌধুরী। এ ছবির বাংলাদেশ অংশের পরিচালক তাহের শিপন। ওখানে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে কাজ করেছি। ছবিটা নিয়ে অনেক প্রত্যাশা। দেখা যাক কী হয়।
i-news : অস্তিত্ব ও মেন্টাল নামে দুটি কমার্শিয়াল ছবিতে কাজ করেছেন আপনি। এরপর বেশ কিছু ভিন্ন ঘরানার ছবিতে ব্যস্ত দেখা যাচ্ছে আপনাকে। কমার্শিয়াল ফ্লেভারে কী আপনাকে দেখা যাবার সম্ভাবনা আছে?
তিশা : আমি সিনেমাকে দেখি দুই ভাগে। একটা ভালো ছবি অন্যটা খারাপ ছবি। তো আমার চেষ্টা থাকে সবসময়ই ভালো ছবি করার। যেখানে গল্প ও চরিত্ররা দর্শককে মুগ্ধ করতে পারে। কাজের পরিমাণের চেয়ে মানটাকেই প্রাধান্য দেই আমি। যে কাজটা সহজে হারিয়ে যায় না মানুষের মন থেকে। সেই ভাবনা থেকে যে কোনো ভালো ছবিতেই আমি কাজ করবো।
i-news : বছর শুরু করেছেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ ছবির শুটিং দিয়ে। ছবিটির আপডেট কী?
তিশা : ‘শনিবার বিকেল’র শুটিং শেষ। এখন এটির সম্পাদনার কাজ চলছে। দ্রুতই ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে আনার চেষ্টা চলছে। আশা করছি ‘হালদা’র পর এ ছবিতেও আমার অভিনয় ভালো লাগবে দর্শকের।
i-news : ছোট পর্দা দিয়ে শুরু করেছিলেন শোবিজের যাত্রা। গেল বছর আপনাকে বলা চলে টিভির কোনো কিছুতেই দেখা যায়নি। একেবারেই বিরতি নিয়েছেন ছোট পর্দা থেকে?
তিশা : ব্যাপারটি এমন নয়। দুই বছর ধরেই আমি ছোট পর্দা থেকে খানিকটা দূরে। তবে ঈদ-পূজার মতো বিশেষ দিবসগুলোতে কাজ করেছি। আর বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছি। রবির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে শিগগিরই রবির বিজ্ঞাপনে কাজ করার কথা আছে।
i-news : বাংলাদেশের অনেক শিল্পীরাই কলকাতায় কাজ করছেন। আবার ওপারের শিল্পীরাও হামেশাই এপারে আসছেন। দুই দেশের কাজের এ সম্পর্কটাকে কীভাবে দেখেন আপনি?
তিশা : এ কোলাবোরেশনকে আমি খুবই ইতিবাচকভাবে দেখি। দুই দেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও আচরণে অনেক মিল। অরিন্দম শীল বলছিলেন দুই বাংলার ইমোশনেও অনেক মিল রয়েছে। এ মিলের জায়গা থেকে যদি মিলেমিশে ভালো কিছু করা যায়, বাংলার ভাষার ছবিকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া যায় সেটা তো অবশ্যই প্রশংসার ব্যাপার। এজন্য প্রতেককে সৎ থাকতে হবে, দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।
i-news: নতুন কোনো চলচ্চিত্রের খবর আছে?
তিশা : যেহেতু চলচ্চিত্রে ব্যস্ত তাই প্রচুর প্রস্তাব আসে। আমিও ভেবে দেখছি অনেকগুলো। ব্যাটে বলে মিলে গেলে দ্রুতই কিছু ভালো খবর পাবেন।