23-01-2018 11:53:13 AM
বদলে গেছে খুলনার পাসপোর্ট অফিস। কয়েকদিন এ অফিস পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি চোখে পড়ে। এর নেপথ্যে রয়েছে বর্তমান পরিচালকের কিছু সিদ্ধান্ত্ম ও পদক্ষেপ। অফিস আঙ্গিনায় ঢোকার প্রবেশ গেটেই দায়িত্বরত আনসার ও পুলিশ সদস্য পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের আবেদনপত্র/ডেলিভারি রিসিট কিংবা অফিসে ঢোকার প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে লোকজনকে ভেতরে প্রবেশে সহায়তা করছেন।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাস করা হলে দায়িত্বরত আনসার সদস্য জানান, পাসপোর্টের প্রয়োজন ব্যতীত অবাঞ্ছিত ব্যক্তি যেন ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনা থাকায় তাদের (অবাঞ্ছিত ব্যক্তি) প্রতিরোধের জন্য এভাবে যাচাই করা হচ্ছে। পাসপোর্ট করার বিষয়ে তথ্য জানার কথা বলে ভিতরে প্রবেশ করেন। অফিস ভবনে ঢোকার গেটেই চোখে পড়ে সেবা নির্দেশিকা বোর্ড। এখানে কক্ষ নম্বর উলেস্নখপূর্বক সেবা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে, যা অনুসরণপূর্বক সংশিস্নষ্ট রম্নমে গিয়ে সেবা প্রত্যাশিত ব্যক্তি তার কাঙ্ক্ষিত সেবাটি নিতে পারেন।
গেট দিয়ে ঢুকে হলরম্নমের ডান পাশে রয়েছে নাগরিক সেবা কেন্দ্র। সেখানে দায়িত্বরত কর্মচারীকে ফরম বিতরণ ও আবেদন ফরম পূরণের নিয়মাবলি বুঝিয়ে দিতে দেখা যায়। এখানে আবেনকারীকে স্টাপলার, গাম ও আটা দিয়ে সহায়তা করা হয়। এখানেই চোখে পড়ে পূরণকৃত নমুনা আবেদন ফরম এবং এর পাশেই ফরম পূরণের নিয়মাবলি সংবলিত টাঙ্গানো বোর্ড এবং তা দেখেই সংশিস্নষ্ট কর্মচারী পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের ফরম পূরণের নিয়মাবলি বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া অফিস আঙ্গিনায় দর্শনীয় স্থানে নাগরিক সেবা প্রদানসংক্রান্ত্ম আপডেটেট সিটিজেন চার্টার, ফি জমার জন্য ব্যাংকসমূহের নাম সংবলিত বোর্ড এবং বিভিন্ন নিয়মাবলি সংবলিত বোর্ড টাঙ্গানো রয়েছে, যা দেখে একজন আবেদনকারী পাসপোর্ট করা সংক্রান্ত্ম যাবতীয় গাইডলাইন পেয়ে থাকেন।
এ অফিসে বৃদ্ধ, অসুস্থ, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা ও মহিলা আবেদনকারীদের জন্য রয়েছে আবেদনপত্র জমা দান ও তৈরি পাসপোর্ট গ্রহনের আলাদা কাউন্টারের ব্যবস্থা। অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাদের জন্য রয়েছে কলিংবেলের ব্যবস্থা, কলিংবেলটি বাজালেই তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে যান অফিসের কর্মচারী। আগত পাসপোর্টপ্রত্যাশীদের জন্য রয়েছে মানসম্মত অপেক্ষাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা। পুরম্নষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের স্থান এবং বাচ্চাদের জন্য ব্রেস্টফিডিং রম্নমের ব্যবস্থা। তৃষ্ণা নিবারণের জন্য রয়েছে পানির ব্যবস্থা। পরিচালক, মো. আবু সাইদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি বলেন, আবেদনকারীদের আবেদন ফরম পূরণ, সত্যায়ন, ব্যাংক ফিস জমা ইত্যাদি বিষয়ে লিফলেট তৈরি করে জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে, যাতে পাসপোর্ট প্রত্যাশী যেকোনো ব্যক্তি নিজের পাসপোর্টসংক্রান্ত্ম কাজটি নিজে করতে পারেন।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোনো পাসপোর্ট আবেদনকারী অবাঞ্ছিত লোক দ্বারা প্রতারিত না হয় সে বিষয়ে নজরদারি রাখা হবে। পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায় ২০১৭ সালে বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, খুলনায় প্রায় ৫৫,০০০ হাজার পাসপোর্ট ইসু্য হয়েছে এবং প্রায় ১৮ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জিত হয়েছে। আরও জানা যায় ২০১০ সালে এমআরপি শুরম্ন হওয়ার পর থেকে এ অফিস থেকে প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ইসু্য এবং এ বাবদ প্রায় ১২৮ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব অর্জিত হয়েছে, যা দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
জানা গেছে, পরিচালক আবু সাইদের কর্তব্য, নিষ্ঠা, দক্ষতা এবং অক্লান্ত্ম পরিশ্রমের ফলে পাসপোর্ট অফিসটির চালচিত্র অভাবনীয়ভাবে পাল্টে গেছে। এই দক্ষ কর্মকর্তার আন্ত্মরিকতায় সাধারণ মানুষের ভোগান্ত্মি কমে গেছে বহুগুণে। তিনি খুলনা অফিসের দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে পাসপোর্ট অফিসটি ছিল দালালদের দখলে। এই দক্ষ কর্মকর্তা খুলনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগদান করার পরপরই দালাল নির্মূল অভিযান শুরম্ন করেন।