13-12-2016 03:41:34 PM
আমাদের ফকিহগণ হালাল হারাম সর্ম্পকে বেশ কিছু মূলনীতি তৈরি করেছেন। সেখানে একটি মূলনীতি এমন আছে যে, অবারগতা অনেক নাজায়েজ ও হারাম কাজকে বৈধ করে দেয়। (আবনে নুজাইম, আল আশবাহ ওয়ান নাযাইন: ৮৫) কোরআন ও হাদিসে এই মূলনীতির ভিত্তি আছে।পবিত্র কোরআনে অপারগতা ও কোন কিছু না পাওয়ার কারণে মৃত্যুর সম্মখিন ব্যক্তিকে মৃত প্রানী খাওয়ার বৈধতা দিয়েছে। এমন কি শূকরের গোশত খাওয়ারও অনুমতি দিয়েছে। অবশ্য এই খাওয়া শুধু জীবন বাঁচানো জন্য খাওয়া। আনন্দ ফুর্তির জন্য খাওয়া নয়।হাদিসে একটা কথা এসেছে, ক্ষতির শিকার হওয়া যাবে না, আবার ক্ষতি করাও যাবে না। (আল আশবাহ: ১৭৩) আর আমরা বুঝি, মানবিক প্রয়োজনও এটাই। এই কারণে আমাদের ইমাম ও ফকিহগণ অস্বভাবিক অবস্থায় ঘটিত সমস্য নিরসনের জন্য এটাকে একটা মূলনীতি হিসাবে গ্রহণ করেছেন।প্রখ্যাত আলেম আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতি (রহ.) এর সাথে আরো একটি শর্ত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যে প্রয়োজনের স্বার্থে হারাম কাজটি করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে সে প্রয়োজনটি অনুমোদিত হারামের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ ও নিন্মস্তরেরর হলে হবে না। যেমন, কোন ব্যক্তিকে যদি কাউকে ব্যক্তিকে হত্যা করা ব্যপারে বাধ্য করা হয় কিংবা কারো সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার জন্য বাধ্য করা হয়- তাহলে সে নিজের জীবন রক্ষা করার জন্যে অন্যকে হত্যা করা কিংবা ব্যভিচার করা জায়েজ হবে না। কেননা জীবনে আশংকা-হত্যা ও ব্যবিচরের থেকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। (প্রাগুক্ত)সুতরাং এই মূলনীতির উপরে ভিত্তি করে আমাদের ইমাম ও ফকিহগণ অনেক মাসায়েল সমাধান বের করেছেন। উদাহরণত বলা যায়, এক ব্যক্তি খাবার খাওয়ার সময় তার গলায় খাবার আটকে গেলো আর তার কাছে মদ ছাড়া আর কোন পানীয় খাবার নেই তাহলে ঐ লোকের জন্য তখন মদ খাওয়াই জায়েজ হবে। উদাহরণত আরো বলা যায়, যদি কারো অবস্থা এমন হয় যে তার কাছে রেশমি কাপড় ছাড়া আর কোন কাপড় নেই তাহলে তার জন্য উলঙ্গ অবস্থায় নামাজ পড়ার থেকে সেই রেশমি কাপড় পরে নিবে। (তাতারখানিয়া ১.৪১৮)