18-10-2016 10:42:31 AM
শেয়ারবাজারে প্রভাব ফেলতে পারে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে আলোচনা করতে একমত হয়েছে আর্থিক খাতের সব নিয়ন্ত্রক সংস্থা। স্ট্যান্ডার্ড ইনস্যুরেন্সের লাইসেন্স বাতিল এবং তিতাস গ্যাস কর্তৃক প্রাকৃতিক গ্যাসের সঞ্চালন ও বিতরণ মার্জিন ঋণ কমানোর প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সমন্বয় বাড়াতে একমত পোষণ করেছে।
আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, বিমা কোম্পানির নিয়ন্ত্রক আইডিআরএ, ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এমআরএ, যৌথ মূলধনি কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরজেএসসির প্রতিনিধিদের নিয়মিত সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। সভায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত হননি।
সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী জানান, সভায় বিএসইসিকে অবহিত না করে স্ট্যান্ডার্ড ইনস্যুরেন্সের লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়ে আইডিআরএর সিদ্ধান্তের আপত্তি জানানো হয়। এ বিষয়ে আইডিআরএ প্রতিনিধিরা জানান, অনিয়মের কারণে বিমা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সভায় আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়, ভবিষ্যতে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
জানা গেছে, গতকালের সভায় ব্যাংক না হয়েও দ্য মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পর্কে আলোচনা হয়। এতে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পদক্ষেপের বিষয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ কারণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। উদ্যোগ নিয়ে আদালতে বিষয়টি মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত হয়।
এ নিয়ে এস কে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকিং লাইসেন্স না নিয়েও মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ সোসাইটির নামের সঙ্গে ব্যাংক ব্যবহার করা বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে হলে সরকারকেই নিতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ অবহিত করা হয়েছে।
সভা সূত্রে জানা যায়, বিএসইসির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্ষদে গ্রহণের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সভা হয়। এর মাধ্যমে গোপন তথ্য প্রকাশ পেয়ে যায়। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং আইন ও বিধি মেনে অনেক সময় যথাযথ পরিমাণ মূলধন সংরক্ষণ করে না। খেলাপি বা শ্রেণীকৃত ঋণের বিপরীতেও সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে না। এ বিষয়টি বিবেচনা না করে লভ্যাংশ ঘোষণা করলে তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ সংকট তৈরি করতে পারে। এ কারণে এ ধরনের পর্যালোচনা বৈঠকের বিকল্প নেই। তবে ওই সভা থেকে কোনো তথ্য যাতে ফাঁস না হয়, তা নিশ্চিত করতে আরও সতর্ক থাকার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।