21-08-2016 02:54:51 PM
রাজধানীর বাজারে কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম। কয়েক মাস ধরে যে সয়াবিন তেল কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৮২ টাকায় মিলেছে, তা কিনতে এখন ৮৮ থেকে ৯০ টাকা লাগছে।
অন্যদিকে পাম অলিন (সুপার নামে পরিচিত) মিলছে কেজিপ্রতি ৭৮ টাকা দরে। আগে যা ৭০ থেকে ৭২ টাকা ছিল। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও বাজারে তেলের সরবরাহ কমে যাওয়া খোলা তেলের দর বাড়ার কারণ।
দেশে বছরে প্রায় ১৪ লাখ টন সয়াবিন ও পাম তেল বিক্রি হয়। এর ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ বিক্রি হয় লুজ বা খোলা তেল হিসেবে। দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ খোলা তেল বেশি কেনে। তরল পণ্যের পরিমাপের একক লিটার হলেও বাজারে খোলা তেল বিক্রি হয় কেজি দরে।
কিছুদিন আগে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছিল। এবার খোলা তেলের দাম বাড়ল আরও বেশি হারে।
ঢাকার কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের জব্বার স্টোরের বিক্রেতা আজিজুল হক গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, পাইকারি দোকানে এত দিন প্রতি এক ড্রাম পাম সুপার তেলের দাম সাড়ে ১২ হাজার টাকার আশপাশে ছিল। এখন সেটা ১৪ হাজার টাকার ওপরে উঠেছে। তিনি বলেন, শুক্রবারও এক ড্রাম তেল ১৩ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছি। আজ (শনিবার) সেটা ১৪ হাজার ২০০ টাকায় উঠেছে। ড্রামপ্রতি ১৫ হাজার টাকার সয়াবিন তেল এখন সাড়ে ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে কারওয়ান বাজারসহ বড় বাজারগুলোতে দ্রুত প্রভাব পড়ে। অন্যদিকে দাম কমলেও সবার আগে কমে এসব বাজারে। খোলা তেলের দাম বাড়ার প্রবণতা বড় বাজারগুলোতে দেখা গেছে। দু-এক দিনের মধ্যে ছোট বাজার ও অলিগলির দোকানগুলোতে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও আছে।
খুচরা বিক্রেতারা বলেন, এক ড্রামে তেল থাকে ১৮৬ কেজি। এক ড্রাম সয়াবিন তেলের দাম সাড়ে ১৬ হাজার টাকা হলে এক কেজির দর দাঁড়ায় প্রায় ৮৮ টাকা ৭১ পয়সা। কারওয়ান বাজারের বেশ কিছু দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে সয়াবিন তেল কেজিপ্রতি ৮৮ থেকে ৯০ এবং পাম সুপার তেল ৭৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তেলের দাম পাইকারি বাজারেও বেড়েছে। পাইকারি কেনাবেচার কেন্দ্র পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী আবুল হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের আগে প্রতি মণ সয়াবিন তেলের দাম ২ হাজার ৯০০ টাকার কাছাকাছি ছিল। পরে তা বাড়তে বাড়তে এখন ৩ হাজার ১৫০ টাকার কাছাকাছি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পাম সুপার ২ হাজার ৬৫০ এবং পাম তেল ২ হাজার ৫৭৫ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। বিগত কয়েক দিনে এসব তেলের দাম মণে প্রায় ১০০ টাকা বেড়েছে।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে আবুল হাশেম বলেন, কয়েকটি মিলের কাছে তেল নেই। এতে পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারদরও বাড়তি। এসব কারণে দাম বেড়েছে।
এদিকে বাজারে রসুনের দাম নতুন করে আরও ১০ টাকা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারে চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা ছিল। অন্যদিকে বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কমে কেজিপ্রতি ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকায় নেমেছে, যা গত সপ্তাহে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা ছিল।
বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামে বিশেষ কোনো হেরফের নেই।