19-08-2016 09:53:39 PM
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হলে কার্যকরী একটি ব্যবসার প্লান করতে হবে। বলা হয় পরিকল্পনা কোন কাজের অর্ধেক। আর তাই সঠিক ও সুন্দর ভাবে প্লানিং তৈরী করা সম্ভব হলে ব্যবসায়ে সফলতা পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম আজ আপনাদের জন্য ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বা প্লানিং সম্পর্কে একটি সুষ্পষ্ট ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবে।
ব্যবসা কোন শর্টকাট ব্যবস্থা নয় যেখান থেকে রাতারাতি অনেক অর্থের মালিক হবেন। সুতরাং ব্যবসায়িক প্রোজেক্ট পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ বছরের একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য এবং বিস্তারিত বর্ননা থাকতে হবে অর্থাৎ আপনি কেন, কোন উদ্দেশ্যে, কি লক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করবেন তার বিস্তারিত জানা থাকতে হবে। সেই সাথে কেন ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য সফল করবেন এবং কিভাবে করবেন তাও সুর্নিদিষ্ট করতে হবে।
শুরুতেই আপনি নিজের কাছে প্রশ্ন করুন আপনি কে। আপনার কার্যক্ষমতা কতটুকু? কে কে আপনার ব্যবসার আংশীদার হতে পারে? আপনি বর্তমানে কি করেন? আপনি কি সবার থেকে আলাদা? যদি আলাদা হন তাহলে কেন আপনি অন্য সবার থেকে আলাদা? খুজে বের করার চেষ্টা করুন অন্যের থেকে বাড়তি কি যোগ্যতা আছে আপনার সেই সাথে খুঁজুন সীমাবদ্ধতা।
আপনি যে ব্যবসা করবেন বলে ভাবছেন কিংবা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অন্য কারা তা বর্তমানে করেছে? যে ব্যবসায় করবেন সে ব্যবসার পরিধি বা মার্কেট সাইজ কতটুকু হবে? এই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে আপনার জন্য কি কি সুযোগ অপেক্ষা করছে সেই সাথে আপনার জন্য কি কি হুমকি অপেক্ষা করছে তাও আপনাকে খুজে বের করতে হবে। জানতে হবে বাজারে কারা আপনার প্রতিযোগী। আপনার প্রতিযোগীদের কৌশল ও তাদের আচরন সম্পর্কেও পুর্ন ধারনা নিতে হবে।
আপনি যে পন্য বা সেবাটি নিয়ে ব্যবসায় শুরু করবেন তার সাম্ভাব্য ক্রতা চিহিৃত করার সাথে সাথে তাদের চাহিদা পর্যালোচনা করতে হবে আপনাকে। এক্ষেত্রে আপনার সার্মথ্য এবং দুর্বলতা সমূহ কি কি তা জানার চেষ্টা করুন। কারন সে অনুযায়ী আপনাকে পরিকল্পনার গতিপথ নির্ধারন করতে হবে। আপনার প্রতিযোগীদের থেকে আপনার টার্গেট মার্কেট কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ তা জানার চেষ্টা করুন। কারন সে অনুযায়ী আপনাকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে।
আপনাকে সুষ্পষ্ট ভাবে ধারনা রাখতে হবে মার্কেট শেয়ার বা মার্কেটের কত অংশ আপনি দখল করবেন। মার্কেটে কি ধরনের নিয়ন্ত্রক বিদ্যমান আছে? এবং তারা কিভাবে অন্যান্যদের নিয়ন্ত্রন করছে। আপনি কি বিক্রি করবেন? অর্থাৎ আপনি যে পন্য বা সেবা বিক্রি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি কি? সেই সাথে যে পন্য বা সেবায় আপনি বিক্রয় করবেন তর নির্দিষ্ট লভ্যংশের হার কত? আপনার মেধা সম্পত্তি কতটুকু?
এ পর্যায়ে এসে আপনার ব্যবসা সম্পর্কিত রিসার্চ এবং উন্নয়ন কার্যক্রম কি কি হবে তা সুস্পষ্ট ভাবে ব্যখ্যা করতে হবে। আপনার ব্যবসায়কে পরিচিত করার জন্য মার্কেটিং পরিকল্পনা কি? ব্যবসায়ের টার্গেট মার্কেটে অনুপ্রবেশের কৌশল কি? ক্রেতা বা টার্গেট মার্কেটে আপনার যোগাযোগ কৌশল কি? বিপনন কৌশল কি? মূল্য নির্ধারন কৌশল কি? পন্য বা সেবার বিক্রয় কৌশল কি? সেই সাথে এ্যাকশন প্লান বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যা যা করা দরকার তা সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহিৃত করতে হবে।
কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের কাঠামো কি হবে তার পরিকল্পনা করতে হবে আপনাকে। কর্মী সংগ্রহ কৌশল কি হবে? আপনার কর্মী বাহিনীকে দক্ষ করার কৌশল কি? নতুন কর্মীর ক্ষেত্রে যোগ্যতা উন্নয়ন পরিকল্পনা কি? আপনার পন্য তৈরীর জন্য যা যা দরকার তার কতটুকু আছে? কোথা থেকে কিভাবে সংগ্রহ হবে? প্রজেক্ট ব্যয় কত হবে? কত সময় দরকার হবে? কত আয় হবে? কি পরিমান ঝুঁকি নিতে হবে? ঝুঁকি কমানোর জন্য কি ব্যবস্থা করা করা হবে? অর্থায়ন কিভাবে হবে? ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর কিভাবে কাজ করবে? কিভাবে ম্যানেজ করবেন সবকিছু তা নির্দিষ্ট করতে হবে?
উপরের আলোচনার বিষয় সমুহ সুনির্দিষ্ট করে সংযুক্ত করে ব্যবসার প্লানিং বা পরিকল্পনা করতে পারলে ব্যবসায়ের সফলতার পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। সুন্দর একটি সাজানো গোছানো পথে হাঁটলে ব্যবসায়ের সমৃদ্ধিতো সময়ের ব্যাপার। আর তাই সুষ্ঠ পরিকল্পনা আপনাকে করতেই হবে।
শুভকামনা রইল সকলের জন্য। উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকমের আপডেটগুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন। এ বিষয় সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানান কমেন্ট করে। ধন্যবাদ সকলকে। শুভেচ্ছা নিরন্তর।