26-10-2017 09:51:07 AM
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। একতলা পাকা ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে। হুড়মুড় করে মাথার ওপর ভেঙে পড়ার ঝুঁকি। এ কারণে সেখানে শিক্ষকেরা পাঠদান করেন না। পাশে আরেকটি টিনের ঘর রয়েছে। সেখানে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো কক্ষ নেই। তাদের পাঠদান করা হয় গাছতলায়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে ১ একর ৫৬ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ১৯৯৪ সালে সরকারি অনুদানে তিন কক্ষের একতলা একটি ভবন নির্মাণ হয়। ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। একমাত্র পাকা ভবন ইতিমধ্যে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ভবনের পুব পাশে টিনের ঘর নির্মাণ করেছে।
৮ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা গেছে, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অপর্ণা রানী চক্রবর্তী বিদ্যালয়ের আঙিনায় গাছের নিচে বেঞ্চ পেতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিতু খানম ও আলামিন শেখ বলে, ‘একটা দালানঘর থাকলেও ঘর থেকে সিমেন্ট-বালু মাথার ওপর খসে পড়ে। এর আগে দু-তিনজনের মাথা কেটেও গেছে। ভয়ে আমরা ভেতরে ক্লাসে যাই না। আমাদের ক্লাস হয় বাইরে।’
নবম শ্রেণির নাদিয়া খানম, লিমন মোল্লা ও মুরাদ হোসেন বলে, বৃষ্টি হলে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস এমনিতেই ছুটি হয়ে যায়। সারা দিন বৃষ্টি হলে ওদের বিদ্যালয়ে আসা লাগে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ বসাক বলেন, ‘জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল ও খেলাধুলাসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শিক্ষার্থীরা ভালো করলেও বর্তমানে আমাদের বিদ্যালয়টি শ্রেণিকক্ষ-সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। একটি ভবনের অভাবে শিক্ষার্থীদের আজ খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে। বৃষ্টি এলে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দিতে হয়। কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনের জন্য আবেদনও করেছি কয়েকবার। কিন্তু কাজ হয়নি।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রণজিত কুমার মজুমদার বলেন, শাহাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ৫০ বছরের পুরোনো। বর্তমান ডিজিটাল যুগে এ বিদ্যালয়টি অনুন্নত রয়েছে, তা ভাবাই যায় না। ভবনের অভাবে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে। এটি খুবই কষ্টের বিষয়। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।