21-10-2017 11:35:40 AM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি এক বছরেও। ফলে এ হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট এখনও দিতে পারেনি পুলিশ।
এর মধ্যে মামলার তদন্তভার দুইজনের হাত বদল হয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) এসেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লিপুর পরিবার ও সহপাঠীরা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক বলেন, ‘তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে আমাদের তৎপরতা চলছে, একটু সময় লাগবে। আশা করা যায়, দ্রুত ভালো কিছু জানাতে পারবো। ’
এদিকে, হত্যার সুষ্ঠু তদন্তে অবহেলার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বিভাগের সামনে লিপু চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, ‘লিপু হত্যার তিন মাসে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই তাদের হাতে এসেছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপর সেই কর্মকর্তারাও চাকরি সূত্রে বদলি হয়েছেন।
এর মধ্যে এক বছর হয়ে গেছে, কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি আমরা পেলাম না। এসব টালবাহানা আর কত করবেন? প্রশাসনের ওপর আমাদের আস্থা যেন থাকে, এ জন্য আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসুন। ’
মামলায় তদন্তে ধীরগতি হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে লিপুর সহপাঠীরা বলেন, আজ লিপুর আমাদের সঙ্গে ক্লাস করার, আড্ডা দেওয়ার, স্বপ্ন দেখার কথা ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্নকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে নির্মমভাবে। আবাসিক হলের ভেতরে তাকে খুন হতে হয়েছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন এখনও চুপ। এখন হত্যার কোনো ক্লু, মোটিভ কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি। আমরা জানতে চাইলে তারা আমাদের বারবার আশ্বস্ত করেন। এভাবেই এক বছর কেটে গেছে। এই এক বছরে মামলার দুইজন তদন্ত কর্মকর্তা বদলি ছাড়া কিছুই হয়নি।
এসময় দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রকৃত আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ড্রেন থেকে লিপুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের দিন তৎকালীন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার, পিবিআই, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। লিপুকে হত্যা করা হয়েছিল বলে ওই সময় পুলিশ ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ওইদিন বিকেলে লিপুর চাচা মো. বশীর বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
লাশ উদ্ধারের দিন লিপুর রুমমেট মনিরুল ইসলামকে আটক করা হয়। তিনদিন পর হত্যা মামলায় মনিরুলকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। কিন্তু ৮ নভেম্বর জজকোর্ট থেকে মনিরুল জামিন পান। জামিনের আগে মনিরুলকে চারদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে মনিরুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্ভব বলে তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা অশোক চৌহান দাবি করেছিলেন। এরপর মামলার তদন্তভার পান মতিহার থানার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুব হাসান। সর্বশেষ চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।