16-01-2018 05:19:21 PM
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে 'সর্বকালের সাহসী নেতা' বলে বর্ণনা করে তাকে স্যালুট জানিয়েছেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। সোমবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের পরিদর্শন বইতে তিনি এ মন্তব্য লিখেছেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। পাঁচ দিনের সফরে প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।
পরিদর্শন বইতে প্রণব মুখার্জি লিখেছেন, 'ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে পুনরায় ভ্রমণ করার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষকে এই বাড়ি থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন শেখ মুজিব, যাকে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে এখানেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে হত্যা করা হয়।'
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি আরও লিখেছেন, 'এই বাড়িটিই একটি নতুন জাতির জন্ম ও এগিয়ে চলার ইতিহাসের সাক্ষী। আমি সর্বকালের সাহসী এই নেতাকে স্যালুট এবং সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।'
এদিকে প্রণব মুখার্জি গতকাল সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি এদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জিও তার সঙ্গে ছিলেন। গণভবনে শেখ হাসিনা তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় তারা কুশল বিনিময় করেন। পরে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও তার মেয়েকে গণভবনে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, প্রণব মুখার্জি আলোচনায় তার অবসর জীবনের কথা বলেন। এখন তিনি পড়াশোনার জন্য প্রচুর সময় পাচ্ছেন, সেটাও বলেন। প্রণব বলেন, 'আমি জীবনের দীর্ঘ সময় রাজনীতি করেছি। ভারতের সংসদে এবং রাষ্ট্রপতি পদের মতো সাংবিধানিক পদে ছিলাম। অবসর গ্রহণের পরে আমার অফুরন্ত সময় পড়ার জন্য।'
২০১২ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর প্রণবের প্রথম বিদেশ সফর ছিল এই বাংলাদেশে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তাকে সম্মাননাও দেওয়া হয়েছিল। সেই সফরের কথাও এবার স্মরণ করেন এক সময়ের এই কংগ্রেস নেতা। গত জুলাইয়ে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরও প্রথম সফরে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।
ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের এক সময়ের অর্থমন্ত্রীর সামনে এদেশের অর্থনীতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের বিভিন্ন বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের ফলে দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। গত বছরের বন্যার ফলে দেশের অর্থনীতি কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে চলে আসা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার কথাও প্রধানমন্ত্রী তাকে জানান।
সৌজন্য সাক্ষাতের সময় শেখ রেহানার ছেলে রেদোয়ান সিদ্দিক ববি, প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় শেখ হেলালউদ্দিন, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।