12-12-2017 02:38:43 PM

ছয় পরিবারকে একঘরে!

newsImg

এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার খবরে প্রতিপক্ষরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন ওই সব পরিবারের সদস্যরা।

ওই ছয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের টুং গ্রামের আকন্দপাড়ার সাদেক আলী আকন্দের সঙ্গে ১ একর ৯২ শতক জমির জিম্মাদার নিয়ে একই গ্রামের আবদুর রউফ, গোলাম কিবরিয়া, রুহুল আমিন, আবু সালেহ, মতিউর রহমান, হাবিবুর রহমানসহ ওই গ্রামের আরও ১৫ থেকে ১৬ জনের বিরোধ চলছিল। ১৫ থেকে ২০ দিন আগে ওই সম্পত্তির গাছপালা, বাঁশ-ঝাড়সহ প্রায় তিন লাখ টাকার সম্পদ হাতিয়ে নেন প্রভাবশালী রউফ, আবু সালেহ ও অন্যরা। এ বিষয়ে সাদেক কয়েকবার তাঁদের নিষেধ করলে রউফরা তা মানেননি। এ নিয়ে উল্টো রউফরা ৫ ডিসেম্বর রাতে বৈঠকের আয়োজন করেন। ওই গ্রামের আলাউদ্দীন আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে বিবদমান ওই সম্পত্তির জিম্মাদার ছেড়ে দিতে সাদেকের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। সাদেক সম্পত্তির জিম্মাদার ছেড়ে দিতে অসম্মতি জানালে সাদেকসহ ছয় পরিবারকে ওই দিন থেকে একঘরে করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর থেকে ওই ছয় পরিবারকে জমিতে পাকা ধান কাটা, বীজতলা তৈরিতে পানি সেচ, চলাফেরাসহ নানা কাজে বাধা প্রয়োগ করছেন আবু সালেহ, রউফ ও তাঁদের সমর্থকেরা। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সাদেকের ছেলে হজরত আলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ সেটিকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করে। ওই জিডির খবরে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রউফ ও তাঁর দলবল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে রউফ ও তাঁর লোকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

সাদেক ও তাঁর ছেলেরা শনিবার সকালে রানীনগর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, থানায় বিষয়টি জানানোর পরও প্রভাবশালী সমাজপতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় জীবন বাঁচাতে এখন তাঁরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সাদেকের ছেলে শাফিউল আলম বলেন, ‘সমাজপতিদের বাধায় আমাদের জমিতে পানি দেওয়া হচ্ছে না এবং জমিতে ধান কাটা কাজের লোকজনের বাধা দেওয়া হয়েছে।’

আবু সালেহ বলেন, ওই সম্পত্তি নিয়ে একডালা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলামের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কয়েক দফা শুনানির পর উভয় পক্ষের মধ্যে আপসনামার ভিত্তিতে গাছপালা কেটে বিক্রি করে এর অর্থ মসজিদের উন্নয়নে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। এটা সাদেক না মেনে উল্টো একঘরে করা হয়েছে বলে গুজব ছড়াচ্ছেন।

বৈঠকের সভাপতি আলাউদ্দীন আলী বলেন, হজরত আলীদের একঘরে করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খাস সম্পত্তির বিষয়টি পরিষদে সমাধান করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই গ্রামে একঘরে করার ঘটনা আমার জানা নেই।’

রানীনগরের ইউএনও সোনিয়া বিনতে তাবিব বলেন, ‘ছয় পরিবারকে নয়, সেখানে এক পরিবারকে একঘরে করার ঘটনার অভিযোগ জানার পরই আমি ওসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়েছি।’

রানীনগন থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রোববার তিনি ওই গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। একঘরে করে রাখার ঘটনা সঠিক নয়। মূলত জমির জিম্মাদারিকে কেন্দ্র করে ওই বিবাদের সৃষ্টি হয়েছে।