বানিজ্য

06-11-2017 09:53:50 AM

ঢাকা সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স বাড়ছে আড়াই গুণ

newsImg

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) দুটি অঞ্চলের বাড়িওয়ালাদের প্রায় আড়াই গুণ করে ট্যাক্স বেড়েছে। অঞ্চল-১ ও ২-এর ১৯টি ওয়ার্ডে সমন্বয়ের পর হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির এমন হারের কথা জানা গেছে। ২৭ বছর পর নেওয়া সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সমন্বয়ের এই কাজ সার্বিকভাবে শেষ হতে আরো চার মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমান ভাড়া অনুযায়ী, ১২ শতাংশ হারে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের জন্য কাজ করছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন। ডিএসসিসির অঞ্চল ১ ও ২-এ যার কাজ শেষ হয়েছে। এখন অঞ্চল ৫-এর কাজ চলছে। ডিসেম্বর থেকে ৩ ও ৪ নম্বর অঞ্চলে এ কাজ শুরু হবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল ১ ও ৩-এর কাজ চলছে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসিরি প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার বলেন, ২৭ বছর আগের ভাড়া অনুযায়ী বাড়িওয়ালারা ট্যাক্স দিতেন। কিন্তু আগে ভাড়া এক হাজার থাকলে এখন তা ১০ হাজার হয়েছে। সে কারণে বর্তমান ভাড়া অনুযায়ী ১২ শতাংশ হারেই ট্যাক্স কত হবে, তা নির্ধারণ করতে কাজ চলছে। অঞ্চল ১ ও ২-এর ভাড়া সমন্বয়ের কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯টি ওয়ার্ডের কাজ শেষে গড়ে আড়াই গুণ করে ট্যাক্স বেড়েছে। অর্থাৎ যিনি এতদিন ২০ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতেন, তিনি এখন ৫০ হাজার টাকা দেবেন। কিছু কম-বেশি রয়েছে।

ডিএসসিসির ৫৭টি ওয়ার্ডে ট্যাক্স সমন্বয়ের কাজ শেষ হতে আরো চার মাসের মতো সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

ডিএসসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা-১ মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, এই অঞ্চলটি ৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এখানে ধানমণ্ডি, কাকরাইল, সেগুনবাগিচা, মগবাজারসহ আশপাশের এলাকা অন্তর্ভুক্ত। আমাদের মাঠের কাজ শেষ হয়েছে। কয়েকজনের আপত্তি রয়েছে। রিভিউ ও শুনানি শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঠিক কত টাকা আমরা ট্যাক্স বেশি পাবো, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সেটি জানতে হলে চলতি মাস (নভেম্বর) অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান তিনি।

ডিএসসিসির অঞ্চল-২ ভুক্ত শান্তিবাগের এক বাড়িওয়ালা বলেন, তিনি আগে ২৪ হাজার টাকার মতো ট্যাক্স দিতেন। কিন্তু, সম্প্রতি ট্যাক্স সমন্বয়ের পর তার ৭১ হাজার টাকা ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। হঠাৎ করেই এত টাকা ট্যাক্স বাড়ানো অযৌক্তিক বলেও মনে করেন তিনি।

এদিকে, ডিএনসিসির কর্মকর্তারা জানান, ট্যাক্স সমন্বয়ের কাজ চলছে। তবে কতটা বাড়লো কিংবা বেড়েছে, তা জানাতে পারেননি তারা।

তবে সূত্র মতে, ট্যাক্স অন্তত চারগুণ বাড়তে পারে। এ কারণে অনেক আপিলও হয়েছে। তবে রিভিউ শেষ হলে ট্যাক্স বৃদ্ধির এই হার তিন থেকে ছয় গুণ হতে পারে।

দুই সিটি করপোরেশন থেকে জানা যায়, গত ২৭ বছর ধরে রাজধানীর বাড়ির মালিকরা কেউ কম, কেউ বেশি হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতেন। ১৯৮৯-৯০ সালে পুরো ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় সাধারণ কর হার নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২০০৩ এবং ২০০৮ সালের পর নিবন্ধিত নতুন বাড়ির মালিকদের সেই সময়ের ভাড়ার মূল্য অনুযায়ী বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু ২০০৩ সালের আগে নিবন্ধন পাওয়া বাড়ির মালিকরা ১৯৮৯ সালের আগের বাড়ি ভাড়ার মূল্য অনুযায়ী হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতেন।

নিয়মানুযায়ী, প্রতি ৫ বছর পর পর সাধারণ সমন্বয় করার কথা। কিন্তু এতদিন পর সমন্বয় করায় হঠাৎ করে ট্যাক্স বেশি দিতে হবে বাড়িওয়ালাদের। আইনগত এর বৈধতা থাকলেও হঠাৎ অতিরিক্ত হারে ট্যাক্স দেওয়াটা নিজেদের ওপর বোঝা বলেই মনে করছেন বাড়িওয়ালারা। তবে নগরের বিশাল জনগোষ্ঠীর বড় অংশই ভাড়াটিয়া। বাড়িওয়ালারা ইতোমধ্যেই তাদের বোঝা ভাড়াটিয়ার ওপর চাপানো শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।