বাংলাদেশ | শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ,১৪৩১

অর্থনীতি

14-10-2016 03:41:20 PM

১৭১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করবে আইসিবি

newsImg

শেয়ারবাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের ১৭১ কোটি টাকার সুদ মওকুফের উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। শিগগির পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ সুদ মওকুফ করার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইফতেখার-উজ-জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরের স্থিতি অনুযায়ী যেসব মার্জিন ঋণ গ্রহণকারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে মূলধন ঘাটতি ছিল, তাদের এ সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। মূল আইসিবির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১২ হাজার ৮৪৯ জন। যেসব বিনিয়োগকারীর মার্জিন ঋণ হিসাবে শেয়ার রয়েছে, তাদের ২০ শতাংশ সুদ নগদে পরিশোধ সাপেক্ষে বাকি ৮০ শতাংশ সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবে বর্তমানে কোনো শেয়ার নেই, তবে সুদসহ ঋণ বকেয়া আছে, তাদের শতভাগ মওকুফ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আইসিবির উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. নুরুজ্জামান জানান, ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে বিও হিসাবে শেয়ার আছে এবং মূলধনী লোকসান আছে এমন বিনিয়োগকারী ৭ হাজার ৭৪ জন। এদের বকেয়া সুদের পরিমাণ ২১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এ সুদের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ বা ১৬৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা মওকুফ করা হবে। তবে শর্ত হচ্ছে, তাদের বাকি ২০ শতাংশ সুদ এককালীন পরিশোধ করতে হবে। এর পরিমাণ ৪১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

 

এ ছাড়া সুদসহ মার্জিন ঋণ বকেয়া আছে এবং বিও হিসাবে বর্তমানে কোনো শেয়ার নেই আইসিবিতে এমন আরও ৫ হাজার ৫৭৫ জন বিনিয়োগকারী রয়েছেন। অর্থাৎ তারা ইতিমধ্যে সব শেয়ার লোকসানে বিক্রি করেও সুদসহ ঋণের পুরোটা পরিশোধ করতে পারেননি। এ বিনিয়োগকারীদের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর পুরোটাই মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানতে চাইলে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইফতেখার-উজ-জামান বলেন, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া শেয়ারদরের ধস পরের দুই বছর অব্যাহত থাকায় কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী বড় ধরনের মূলধনী লোকসানে পড়েছেন। এরই মধ্যে কিছু বিনিয়োগকারী সর্বস্ব হারিয়ে শেয়ারবাজার ছেড়েছেন। বড় ধরনের লোকসানে থাকায় অনেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারছেন না। তাদের মধ্যে যারা আইসিবির মাধ্যমে শেয়ারে বিনিয়োগ করেন, তাদের সক্রিয় করতে এ উদ্যোগ নিয়েছে আইসিবি।

বাজার ধসের সাড়ে পাঁচ বছর পর দেশের শেয়ারবাজার অনেকটাই স্বাভাবিক বলে জানিয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, শেয়ারবাজারে নতুন করে বিনিয়োগে এখন বড় কোনো ঝুঁকি নেই বললেই চলে। বরং এখান থেকে মুনাফা করার ভালো সুযোগ আছে। তবে নিয়মিত বিনিয়োগকারীদের একটা বড় অংশ লোকসানে নিষ্ক্রিয় থাকায় লেনদেনে কাঙ্ক্ষিত গতি আসছে না। এ অবস্থায় নিজস্ব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যারা এ ধরনের সংকটে আছেন, তাদের সক্রিয় করতে সুদ মওকুফের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইফতেখার-উজ-জামান বলেন, আপাত দৃষ্টিতে সুদ মওকুফ থেকে আইসিবির ১৭১ কোটি ৮ লাখ টাকা লোকসান হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে। নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হলে বাজার লেনদেনে গতিও আসবে। তাদের শেয়ার কেনাবেচায় কমিশন থেকে আয় করবে আইসিবি। এ ছাড়া এতে শেয়ারবাজারে সার্বিক শেয়ারদর ও সূচক বাড়লে আইসিবির নিজস্ব পোর্টফোলিও মূল্যও বৃদ্ধি পাবে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এর ১ পয়েন্ট বৃদ্ধিতে আইসিবির পোর্টফোলিও মূল্য বাড়ে প্রায় ১ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির পোর্টফোলিও মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।খবর সমকাল।

খবরটি সংগ্রহ করেনঃ- i-news24.com
এই খবরটি মোট ( 358 ) বার পড়া হয়েছে।
add

Share This With Your Friends