বানিজ্য

22-08-2016 11:38:50 AM

মোংলা বন্দরে আগ্রহ কমছে ব্যবসায়ীদের

newsImg

লাইটার জাহাজের (বার্জ-কার্গো-কোস্টার) সংকটের কারণে মোংলা বন্দরে আসা বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজের পণ্য খালাসে দেরি হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে আমদানিকারক, পণ্য খালাসকারী প্রতিষ্ঠানসহ বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন মহলের। সুনামও ক্ষুণ্ন হচ্ছে বন্দরটির।
গত মঙ্গলবার বন্দরে অবস্থানরত ক্লিংকার, সার, পাথর, কয়লা, গমসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ১৩টি জাহাজের মধ্যে সাতটিরই পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এর পরে সীমিত পরিসরে খালাস হলেও তা চাহিদার তুলনায় নগণ্য বলে জানান বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাঁরা বলছেন, লাইটার জাহাজের সংকট নিরসনে কোনো কোনো আমদানিকারক ও বন্দর ব্যবহারকারী নিজ উদ্যোগে নৌযান নির্মাণ করতে চাইলেও নানা জটিলতায় অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না।
যশোর নওয়াপাড়ার আমদানিকারক শেখ ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এ বন্দরে তাঁর গম ও সারবাহী দুটি জাহাজ রয়েছে। লাইটার-সংকটের কারণে পণ্য খালাস করতে না পারায় প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। এর আগে একইভাবে আরও তিনটি জাহাজে ব্যাপক লোকসান হয়েছে। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে হবে।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স নুরু অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী হোসাইন মোহাম্মদ দুলাল জানান, লাইটার জাহাজসংকটের কারণে মোংলা বন্দরে আগত জাহাজ দিনের পর দিন অলস হয়ে পড়ে থাকছে। পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজকে এ জন্য প্রতিদিন এক একটি জাহাজকে প্রায় ১০ থেকে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে। পণ্য খালাসকাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বিদেশি জাহাজের মালিকেরা তাঁদের জাহাজ পাঠাতে অনীহা দেখাচ্ছেন।
ইউনিক মেরিটাইমের পরিচালক শেখ বদিউজ্জামান বলেন, যখন লাইটার জাহাজ থাকে না, তখন মাল খালাসে নিয়োজিত শ্রমিকদের অলস বসিয়ে রেখে অতিরিক্ত মজুরি দিতে হয়। অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো এ বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাসকাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বন্দর ব্যবহারকারী জানান, বর্তমান নৌযানমালিকেরা চান না নতুন লাইটার জাহাজ তৈরি হোক। ফলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলও অনুমতি দিচ্ছে না।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিবছরই এ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে। ফলে পণ্য পরিবহনে বাড়তি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নতুন করে লাইটার জাহাজ নির্মাণের অনুমতি থাকা প্রয়োজন।
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, লাইটার জাহাজের সংকটের কারণে বন্দরে জাহাজের পণ্য খালাসে দেরি হয়। এরপরও মাঝেমধ্যে স্বল্পসংখ্যক বার্জ-কার্গো-কোস্টার পণ্য পরিবহনের জন্য পাওয়া গেলেও বেশি ভাড়া এবং অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়ার আশায় সেগুলো ভারত থেকে আমদানি করা সিমেন্ট, ক্লিংকারসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত থাকে।