কেম্পাস

23-04-2016 08:31:31 AM

রাজশাহীর আবাসিক হোটেলে ২শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় আটক ৪

newsImg

রাজশাহী নগরীতে অবস্থিত নাইস হোটেলের কক্ষে দুই শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত লাশ পাওয়া গেছে। তাদের পূর্ব পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারনা। 

পুলিশ বলছে, কক্ষের পরিবেশ ও দুই জনের দেহের জখমের ধরন দেখে ধারনা করা হচ্ছে, তাদের পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। এ খুনে বেশ কয়েক জনের অংশ গ্রহণ থাকতে পারে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন বলেন, “ধারনা করা হচ্ছে তাদের খুন করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। হোটেলের সিসি টিভির ফুটেজও পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।”

নিহত একজন হলেন- বগুড়া শহরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিমের মেয়ে সুমাইয়া নাসরিন (২২)। তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিনি পাবনা সদর থানার রাঁধানগর এলাকায় থাকতেন। তার বাবা আবদুল করিম গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই)। বর্তমানে গাইবন্ধা জেলা ডিবিতে কর্মরত। 

অপরজন হলেন- সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (২৭)। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে ধারনা করা হচ্ছে।

শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নাইস হোটেলের ৩০৩ নম্বর কক্ষটি ঘিরে রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ঘটনাস্থলে বর্তমানে পুলিশ, র‌্যাব, পিবিআই ও সিআইডিসহ বিভিন্ন সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা আলামত সংগ্রহ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুমাইয়ার মুখমণ্ডলে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার মুখ বালিশ দিয়ে ঢাকা অবস্থায় ছিল। আর মিজানুরের লাশ মেয়েটির ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। তার দুই হাতও বাঁধা ছিল। ঝুলন্ত অবস্থায় পরনের প্যান্ট পায়ের গোড়ালিতে আটকে ছিল।

হোটেলের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা দুই জন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলটিতে উঠেছিলেন। তারা হোটেলের ৩০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল বয় ফয়সাল ৩০৩ নম্বর কক্ষটিতে খবরের কাগজ দিতে যান। এ সময় কক্ষটির দরজা ভেতর থেকে লাগানো ছিল। ফয়সাল তাদের অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পায়নি। পরে ওই কক্ষের টেলিফোনে বার বার ফোন করা হলেও কেউ ফোন ধরছিল না। তখন বিষয়টি বোয়ালিয়া থানা পুলিশকে জানানো হয়। 

পরে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করে। এ সময় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছেলেটির লাশ পাওয়া যায়। আর মেয়েটির লাশ ছিল বিছানার ওপরে।

এদিকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেলের সুপারভাইজারসহ চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকৃতরা হলেন- হোটেল সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম (৩৫) এবং হোটেল বয় নয়ন হোসেন (২৫), ফয়সাল আহম্মেদ (২৬) এবং বখতিয়ার হোসেন (৩০)। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের হোটেল থেকে আটক করা হয়।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান, তাদের আটক করে থানায় রাখা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।