সম্পাদকীয়

14-08-2015 07:17:03 PM

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

newsImg

মা-বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। সৃষ্টিজগতের শ্রেষ্ঠ উপহার। দুনিয়ার সব মানুষের বিকল্প কল্পনা করা সম্ভব হলেও মা-বাবার বিকল্প নেই। যেমন- ভাই একাধিক হতে পারে। বোন একাধিক হতে পারে। সন্তান একাধিক হতে বাধা নেই। চাচা-ফুফু একাধিক হতেও কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মা-বাবা একবার যদি দুনিয়া ছেড়ে চলে যান তাহলে তার বিকল্প কোনোভাবেই কল্পনা করা যায় না। তাই পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাঈলের আয়াত ২৩-২৪ এ মহান আল্লাহ মা-বাবার সেবা ও খেদমত করার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে- আপনার পালনকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা একমাত্র তাঁরই এবাদত কর এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর...। আয়াতে লক্ষণীয় ব্যাপার এই যে, মহান আল্লাহর এবাদতের পর অন্য কোনো ব্যাপার উল্লেখ না করে সরাসরি পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো আচরণ ও তাদের খেদমতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আয়াতের পরবর্তী অংশে পিতা-মাতার সঙ্গে শ্রদ্ধাপূর্ণ আচার-আচরণ ও বার্ধক্য বয়সে তাদের খেদমতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তাদের জন্য দোয়া করার প্রতিও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। হাদিসের কিতাবগুলোতেও পিতা-মাতার খেদমতের বিষয়ে প্রিয়নবী (সা.)-এর অসংখ্য বর্ণনা পাওয়া যায়। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, একবার এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমার সংশ্লিষ্ট লোকদের মধ্যে কে সর্বাধিক সৌজন্যমূলক আচরণ লাভের অধিকারী? তিনি বললেন, তোমার মাতা।

সে জিজ্ঞাসা করল, তারপর কে, তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে আবার জিজ্ঞাসা করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মাতা। সে আবারও জিজ্ঞাসা করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে তিনি বললেন, তোমার মাতা। তারপর তোমার মাতা। তারপর তোমার মাতা। অতঃপর তোমার পিতা। এরপর তোমার (পর্যায়ক্রমে) নিকটবর্তী ব্যক্তিরা (বুখারি ও মুসলিম)। পরপর তিনবার মায়ের কথা উল্লেখ করলেন এবং চতুর্থবার বাবার কথা উল্লেখ করলেন। কারণ সন্তান গর্ভে ধারণ, জন্মের পর থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত তাকে লালন-পালনে মায়ের কষ্ট ও অবদান বাবার চেয়ে বহুগুণে বেশি। প্রিয় পাঠক! সন্তানের সুখের জন্য মা-বাবা নিজেদের তিলে তিলে ক্ষয় করেন। সুখ-শান্তি বিসর্জন দেন, যা প্রথমে না বুঝলেও নিজেরা যখন মা-বাবা হয় তখন প্রত্যেকে ঠিকই বুঝতে পারে। মা-বাবার খেদমত করলে নিশ্চিতভাবে বেহেশত লাভ হয়। তাই রসুল (সা.) মা-বাবার খেদমত করার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, রসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, তার নাসিকা ধূলিমলিন হোক, তার নাসিকা ধূলিমলিন হোক, তার নাসিকা ধূলিমলিন হোক। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রসুলুল্লাহ! কে সে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার কোনো একজনকে অথবা উভয়জনকে তাদের বৃদ্ধ অবস্থায় পেল কিন্তু খেদমত করে বেহেশত লাভ করল না (মুসলিম)।

লেখক : খতিব, বাইতুর রহমত জামে মসজিদ, গাজীপুরা, টঙ্গী।