06-01-2018 11:44:12 AM
মহেন্দ্র সিং ধোনি একবার বলেছিলেন, জীবনের মতো ‘ক্রিকেটও দারুণ সাম্যবাদী। বিনীত না হলে, কেমন থাকতে হবে, এটা (ক্রিকেট) আপনাকে তা শিখিয়ে দেবে।’ এ কথার সবচেয়ে মোক্ষম উদাহরণ হতে পারেন স্বয়ং ক্রিকেটাররাই। যে কাজে তাঁরা সিদ্ধহস্ত, ক্যারিয়ার শেষে দেখা যাবে সেখানেই কিছু না কিছু খুঁত থেকে গেছে! কিংবা যে কাজের জন্য নয়, সেখানে হয়তো দুম করে দারুণ কিছু করে ফেলেছেন। আর ‘কাকতাল’ ব্যাপারটা তো ক্রিকেটের অলংকার। খেলাটা কী অদ্ভুত, তাই না! আসুন, জেনে নিই ক্রিকেটের এমনই আজব কিছু বিষয় :
টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি বোল্ড
তাঁর আরেক নাম হয়ে গেছে ‘দ্য ওয়াল’। তাঁর ডিফেন্সে অদ্ভুত এক সৌন্দর্য খুঁজে পেতেন সবাই। সে অনুযায়ী তাঁর মূল কাজ স্টাম্প বাঁচানো। কিন্তু এতেই সবচেয়ে বেশি বধ হয়েছেন। টেস্টে ৫৪ বার বোল্ড হয়েছেন। টেস্টে তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম ১৬ বছরে এভাবে আউট হয়েছেন ২৬ বার। কিন্তু পড়ন্ত বেলায় এসে আর সামলাতে পারেননি। শেষ ১৩ ইনিংসে তিনি বোল্ড হয়েছেন ৯ বার। ফাইনাল সিরিজে ৮ বারের মধ্যে ৬ বার!
সর্বোচ্চ ছক্কা আকরামের
ওয়াসিম আকরাম, সেরা বোলারদের নাম নিলে ওপরের দিকেই থাকবে এ নাম। তবে ব্যাট হাতেও কম যেতেন না, টেস্টে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস তো টেন্ডুলকারের চেয়েও বড়! আরেকটি রেকর্ড তাঁকে ব্যাটসম্যান হিসেবেও সেরা করে রেখেছে। ভিভ রিচার্ড, গেইল থাকা সত্ত্বেও তাঁর নামটা সবার আগে। টেস্টে এক ইনিংসে ১২ ছক্কা মেরে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক অনন্য উচ্চতায় বসে আছেন।
ওয়ার্নের চেয়ে এগিয়ে শচীন
সেরা লেগ স্পিনার বা তর্ক সাপেক্ষে সেরা স্পিনারটি হলেন শেন ওয়ার্ন। কিন্তু ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অনেকটাই পেছনে। এমনকি খণ্ডকালীন লেগ-অফ স্পিন দিয়েই তাঁকে টপকে গেছেন টেন্ডুলকার। শচীন যেখানে ৫ উইকেট নিয়েছেন দুইবার (অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৯৯৮ সালে ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে) আর ওয়ার্ন মাত্র একবার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৯৬)!
জয়াসুরিয়াও এগিয়ে ওয়ার্নের চেয়ে
আবারও ওয়ার্ন, এবারও পিছিয়ে থাকা! শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার সনাথ জয়াসুরিয়ার ওয়ানডে উইকেট শেন ওয়ার্নের চেয়ে বেশি। ৪২৫ ম্যাচে ৩২৩ উইকেট জয়াসুরিয়ার আর সেখানে মাত্র ১৯৪ ম্যাচে ২৯৩ উইকেটেই থেমেছেন ওয়ার্ন।
জন্মদিনের উপহার
জন্মদিন আসে বছরে একবার, আর হ্যাটট্রিক তো পুরো ক্যারিয়ারেই করা যায় এক থেকে দুবার, সেটাও ভাগ্যে থাকলে। সেখানে দুটি একসূত্রে মিলে গেল? এই রেকর্ডটা মাত্র একজনেরই আছে। লোকটার নাম পিটার সিডল। পিটার সিডল হচ্ছেন একমাত্র বোলার, যিনি কিনা নিজের জন্মদিনের মতো বড় উৎসবে এত বড় কাজ করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন। ২০১০ সালের ২৫ নভেম্বর ব্রিসবেনে এই কীর্তি গড়েছেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার।
এক সিরিজে সবার ঘাতক
২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল ভারতে। ১৬ প্লেয়ারের বিশাল বহর নিয়ে। সেবার রবিচন্দন অশ্বিন এক বিশাল কাজ করে বসলেন। ৪ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ১৬ জনই খেলেছিলেন। আর এই ৪ ম্যাচে অশ্বিন প্রত্যেককে আউট করেছেন!
শেষ হয়েও হইল না শেষ
২০০৫ সালে ক্রিস ট্রেমলেট টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। উইকেটে এলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। বল স্টাম্পে লাগিয়েও ছিলেন ট্রেমলেট কিন্তু উইকেট পেলেন না। বেল যে পড়ল না! হ্যাটট্রিকও হলো না তাঁর।
হান্ড্রেড টেস্ট ম্যানস টেস্ট!
কোনো খেলোয়াড় ১০০তম টেস্ট খেললেই সেটা স্মরণীয় হয়ে থাকে। আর যদি এক ম্যাচে তিনজন খেলোয়াড় ১০০তম টেস্ট খেলেন? ২০০৬ সালে এপ্রিলে স্টিফেন ফ্লেমিং, জ্যাক ক্যালিস আর শন পোলক—তিনজনই শততম ম্যাচ খেলেছেন!