সরকারী দল

12-12-2017 03:24:59 PM

আমরা কাউকে নির্বাচনে আসতে বাধ্য করতে পারি না : জয়

newsImg

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের চেয়েও বড় বিজয় পাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি গতকাল বিকেলে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটা জানান।

এ সময়ে সজীব ওয়াজেদ জয় আগামীতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রসঙ্গে বলেন, আমরা কাউকে নির্বাচনে আসতে বাধ্য করতে পারি না।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'আগামী নির্বাচনে ২০০৮ সালের চেয়েও বড় বিজয় আসবে। আমি একটি জরিপ করেছি। তাতে এই ফল পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবেই। দেশের মানুষের বিশ্বাস ও সমর্থন আমাদের প্রতি চলে এসেছে। আওয়ামী লীগকে হারানোর মতো দল বাংলাদেশে নেই। '

ওই জরিপটি কিভাবে হয়েছে জানতে চাইলে জয় বলেন, 'একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে জরিপ করানো হয়েছে। এতে আমিও জড়িত ছিলাম।

আমি মনে করি, এটি অন্যতম একটি সঠিক জরিপ। ' প্রতিবছরই এ রকম জরিপ করা হয় বলেও জানান তিনি।

দলীয় কোন্দল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগে গ্রুপিং-লবিং থাকে; তবে আন্দোলন বা নির্বাচনের সময় সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমে যায়। এটা আওয়ামী লীগের একটা ভালো গুণ। '

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ বলেন, 'বিজয় নিয়ে আমি চিন্তা করি না, কিন্তু ষড়যন্ত্র আছে। খেয়াল রাখতে হবে ৫ জানুয়ারির মতো কোনো ঘটনা-দুর্ঘটনা যেন না ঘটে। ওই সময়ের মতো আগুন সন্ত্রাস যেন না ঘটে। '

আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'সেটি বড় কথা নয়। নির্বাচনটি অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হচ্ছে কিনা, সেটিই বড় কথা। ' তিনি বলেন, 'আমরা কাউকে নির্বাচনে আসতে বাধ্য করতে পারি না। কোনো দল যদি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করতে চায় তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই। '

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'আমি প্রার্থী হচ্ছি না। এটি আপনাদের আগাম জানিয়ে রাখছি। আমার উদ্দেশ্য দলকে ক্ষমতায় আনা। এমপি-মন্ত্রী হওয়ার লোভ আমার নেই। '

সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের ১২ শ কোটি ডলার বিনিয়োগের অভিযোগকে বিএনপির মহাসচিব সম্প্রতি বানোয়াট বলে দাবি করেছেন, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জয় বলেন, 'প্রমাণ হয়েছে তারা কিভাবে মিথ্যা বলে। তারেক রহমান ও কোকো রহমানের বিরুদ্ধে এফবিআই বাংলাদেশে এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। সেখানে ফখরুল সাহেব কিভাবে বলেন যে, তাদের কোনো অ্যাকাউন্ট নেই টাকা নেই। তাদের দুর্নীতির টাকা বিদেশ থেকে ফেরত এসেছে। নিশ্চয় তাদের আরো (দুর্নীতির) টাকা আছে, ধরা পড়বে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এসেছে তাদের ১২ মিলিয়ন ডলারের কথা। তাদের টাকা আগেও ধরা পড়েছে, এবারো ধরা পড়েছে। আর এটা তো কিছু না, নিশ্চয়ই তাদের এমন আরো টাকা আছে যেটা আমরা এখনো জানতে পারিনি। তদন্ত চলছে। '

আগামী নির্বাচনে কি ভূমিকায় থাকবেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয় বলেন, আপনারা দেখেছেন গত নির্বাচনের আমি দলের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছি। নির্বাচনী সফর করেছি। বিভিন্ন মিডিয়াতে সাক্ষাত্কার দিয়েছি। এটা আমার কর্তব্য। গতবারও করেছি, এবারো করব। ভেবে নিতে পারেন এখন থেকেই আছি। ' 

প্রচারণা কৌশল কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'প্রচারণা আমরা সব ভাবেই চালাব। গত চার বছর ধরেই আমাদের প্রচারণা চলছে। যেহেতু নির্বাচন ছিল না তাই সেভাবে বোঝা যায়নি। এখন যেহেতু নির্বাচন আসছে তাই ব্যাপক ভাবেই প্রচারণা চালানো হবে। আমরা সবদিক থেকেই প্রচারণা চালাব। প্রিন্ট মিডিয়া বলেন, ইলেট্রনিক্স মিডিয়া বলেন, সোশাল মিডিয়া বলেন সব দিকেই করব, কোনো দিকে ছাড় দেব না। মিছিল মিটিং করেও প্রচারণা চালানো হবে। '

এ সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, মতবিনিময়কালে সজীব ওয়াজেদ জয় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কাছে তাদের সাংগঠনিক বিষয়াদি জানতে চান। এ সময় আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ, আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, আফজাল হোসেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বক্তব্য দেন।

সূত্রগুলো জানায়, যুব মহিলা লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সারা দেশে তাদের ৪০টি প্রতিনিধিদল পর্যায়ক্রমে কাজ করছে। ইউনিয়ন পর্যন্ত সংগঠনকে গোছানো এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণাই হচ্ছে প্রতিনিধিদলগুলোর উদ্দেশ্য।  

ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাকে (জয়) তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা কাছে থেকে দেখতে চায়, আপনার সান্নিধ্য পেতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয়সহ ছাত্রলীগের কোনো কোনো অনুষ্ঠানে আপনি অংশ নিলে তরুণ প্রজন্ম উত্সাহিত হবে।

সজীব ওয়াজেদের উদ্দেশে কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা বলেন, আপনি সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে বসুন, এটা আমাদের চাওয়া।এ সময় সজীব ওয়াজেদ জয় আগামীতে সহযোগী সংগঠনগুলোকে সময় দেবেন বলে জানান। জয় আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে সকলকে পরামর্শ দেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বেশি বেশি করে প্রচার করতে সকলকে সক্রিয় হতে আহ্বান জানান।