রাজধানী

01-12-2016 03:19:30 PM

অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালছাড়া: ডাক্তার ও নার্সকে হাইকোর্টে তলব

newsImg

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রসব বেদনায় কাতর এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে তাড়িয়ে দেয়ার পর নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোখলেছুর রহমান ও সিনিয়র স্টাফ নার্স সুষমা রানীকে তলব করেছে হাইকোর্ট।

আগামী ১৪ ডিসেম্বর দু’জনকে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ঘটনার তদন্ত করে বগুড়া জেলা প্রশাসককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়। এছাড়াও এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে আদালত।

আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
স্বাস্থ্যসচিব, বগুড়া জেলা প্রশাসক, পিুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, শেরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওসি ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) একটি জাতীয় দৈনিকে ‘তাড়িয়ে দিল নার্স, মাঠে প্রসব : নবজাতকের মৃত্যু’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী শামীম সরদার। এরপর আদালত এ আদেশ দেয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রসব বেদনায় ছটফট করা স্ত্রী মাজেদা বেগমকে রাত ১১টার দিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছিল। সেখানে ভর্তিও করা হয়েছিল তাকে।

এক ঘণ্টা পর প্রসব কক্ষে নেয়ার কথা থাকলেও সেখানে না নিয়ে সিনিয়র স্টাফ নার্স সুষমা রানী মাজেদাকে পাশের মডার্ন ক্লিনিকে নিয়ে ডা. রাফসান জাহান রিম্মীর কাছে সিজার করার জন্য পরামর্শ দেন। মাজেদাকে কয়েকটি ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে তিনি ঘুমাতে চলে যান।

নগদ টাকা না থাকায় নার্সকে ডেকে তোলে মাজেদার স্বজনরা। তারা মাজেদাকে হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসার অনুরোধ জানায়।

রাত পৌনে ১টায় ইনডোর বিভাগের আয়া পারভীন বিবি যন্ত্রণাকাতর মাজেদাকে জোর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। তখন বাইরে নিতে গেলে গেটের কাছে চিৎকার দিয়ে পড়ে যান মাজেদা। অন্ধকার খোলা মাঠে নারকেল গাছের তলায় বালু মাটির ওপর বাচ্চা প্রসব করেন মাজেদা।

প্রসবকালে মাজেদার আর্তচিৎকার শুনে হাসপাতাল রোডের নৈশপ্রহরী ফজলু মিয়া ও পথচারী রিন্টু এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন নার্স সুষমা ও হাসপাতালের নৈশপ্রহরী কাজলকে।
পরে ডাক্তার পিয়াল ও নার্স সুষমা এসে বালু মাটিতে পড়ে থাকা শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।