23-11-2016 09:57:55 AM

পরিচয় মিলেছে আলোচিত সেই ডাকাত কন্যার ! এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য

newsImg

ছোটবেলা থেকে এখন অবধি  গল্প শুনে আর সিনেমাদৃশ্যে বড় মোচওয়ালা সব কদার্য দর্শন ডাকাতের কথা জেনেছি আমরা। সময়ের সাথে সাথে দ্রুতই বদলে যাচ্ছে সব চিত্র ! আগের পেটমোটা পুলিশের বদলে এখনকার পুলিশে যেমন স্মার্ট অফিসাররা যোগ দিচ্ছেন তেমনি পাল্লা দিয়ে চেহারায় পরিবর্তন সংযোজন করেছেন হয়তো চোর ডাকাতেরাও ! এবার বয়সে তরুন সব ডাকাত বন্ধুদের সাথে করে  এসে রীতিমত বোমা ফাটিয়ে আলোড়ন তুলেছেন এক ডাকাত তরুনী ! ডাকাত তরুনীকে নিয়ে আগ্রহের সীমা ছাড়াচ্ছে তরুনীর স্মার্টনেস ও সৌন্দর্য ।

এমনিতে ধরা পড়বার পর ডাকাত দেখতে কৌতুহলী মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ । আর এ দফায় সুন্দরী ডাকাত তরুনীকে আটকে বুঝি আরও বিপাকে পড়েছেন প্রশাসন । মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে খবর । সুন্দরী ডাকাতকে একনজর দেখতে ছুটে আসে হাজার হাজার মানুমো:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি: ঝালকাঠি শহরের মুসলিম গিণি হাউজ নামে একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে দোকান মালিকের ছেলে হাসান ইমাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতদের কাছ থেকে ৪২ ভরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে এক নারীসহ ছয় জনকে আটক করে।

dakat-konna

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। মামলা আসামীরা হলেন, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মো. তৌহিদুল ইসলাম ও একই গ্রামের এসাহাক হাওলাদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম। এছাড়াও মামলায় ৭/৮জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়। এদিকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তার হওয়া শান্তা ইসলাম, কাজী রানা, রুবেল হাওলাদার ও মো. সনি নামের চারজনকে। ডাকাত গ্রেফতার ও স্বর্নলংকার উদ্ধারে ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহম্মাদ আব্দুর রকিব,ডিবির ওসি কামরুজ্জান,সদর থানার ওসি মাহে আলম ও সেকেন্ড অফিসার আব্দুল হালিম তালুকদারের ভুমিকা গুরুত্বপুর্ন ছিল বলে জনিয়েছে পুলিশ ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার বিবরণে জানা যায়,

সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় ৭/৮ জন মুখোশধারী চাপাতি ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্রসহ মো. শাহজাহান হাওলাদারের স্বর্ণের দোকান মুসলিম গিণি হাউজে প্রবেশ করে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় তারা দোকানের শোকেজে থাকা ৫০ লাখ ৭ হাজার ৫২৯ টাকামূল্যের স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। পরে তারা তিনটি মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। ডাকাতরা দোকানের সেলসম্যান সুরেশ চন্দ্রদাসকে রক্তাক্ত জখম করে। ডাকাতির খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় গাবখান টোলপ্লাজার পূর্বপাশ থেকে ডাকাতদের ধাওয়া করে তৌহিদুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামকে স্বর্ণালংকারসহ আটক করে। অন্য ডাকাতরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
পুলিশ সুপার জোবায়েদুর রহমান বলেন, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। ডাকাতদের পৃথক ডাকাতি ও বিষ্ফরক আইনে দুইটি মামলায় অন্য গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 ঝালকাঠির ডাক্তার পট্টি মুসলি গিনি হাউজে মুখোশ পরে বোমা ফাটিয়ে ডাকাতি করে পালিয়ে যাবার সময় এক তরুনীসহ  ৫ ডাকাতকে আটক করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যা ৭ টায় এ ঘটনা ঘটেছে। আটককৃত ডাকাতরা থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আটককৃতদের নাম পরিচয় তাৎক্ষনিকভাবে জানা যায়নি।

গাবখান টোল ঘরের দুই কর্মচারী সময়ের কণ্ঠস্বরকে  জানায়, শহরে ডাকাতির বিষয়টি মোবাইলে ফোনে করে গাবখান টোল ঘরের ম্যানেজারকে জানিয়ে সতর্ক অবস্থান গ্রহন করতে বলে তারা টোল ঘরের সামনে বাশ ফেলে দেয়। ইতিমধ্যে ৩ টি মোটর সাইকেলেযোগে কয়েকজনকে টোল ঘরের সামনে গিয়ে বাশ ফেলানো দেখে গাড়ী ঘুড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এর পেছনেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুর রকিব পেছন থেকে বেরিকেট দিলে ডাকাত সদস্যরা একাধিক বোমা বিস্ফোরন ঘটায়। বোমার শব্দ শুনে ডাকাতরা আতঙ্কিত ছড়িয়ে পড়ে। বোমার শব্দে আশেপাশের লোকজন চারপাশ থেকে ঘেরাও করে এক তরুনী সহ ৫ ডাকাতকে লুন্ঠনকৃত স্বর্নালংকারের একটি বস্তাসহ ধরে ফেলে। সেখান থেকে আটককৃতদের ঝালকাঠি থানায় নিয়ে আসা হও।

নেছারাবাদ এলাকার আঃ কাদেরের পুত্র শহীদ সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, শহরে ডাকাতির খবর রাস্তায় বসে শুনেছি। ইতিমধ্যে ৩ টি মোটর সাইকেলে একযোগে কয়েকজনকে দেখতে পেয়ে ধর ধর বলে ধাওয়া করি। শব্দ শুনে ডাকাতরা আতঙ্কিত হয়ে যেতে থাকে। আমরাও পিছনে ধাওয়া করতে থাকি। একপর্যায়ে গাবখান ব্রিজের টোল ঘরের লোকজন সামনে বেরিকেট দিয়ে আটক করে। ইতিমধ্যে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়ে ৫ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।

ঝালকাঠি জুয়েলারী সমিতির সভাপতি দেবব্রত কর্মকার দেবু জানান, সন্ধ্যা ৭ টার কিছু আগে মোটর সাইকেলে তরুনীকে নিয়ে  ক্রেতা সেজে দোকানে প্রবেশ করে। মুখোশ পড়েই দোকানের মধ্যে বোমা বিস্ফারণ ঘটায়। দোকানে থাকা কর্মচারী ও মালিক আতঙ্কিত হলে বাইরেও শুনতে পায় বোমা বিস্ফোরনের শব্দ।

 

মুসলিম গিনি হাউজের রাস্তার সামনে ডাকাতরা বেরিকেট দিয়ে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা এদিক সেদিক ছুটাছুটি শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে মটোরসাইকেল করে বোমা বিস্ফারন ঘটিয়ে চলে যায়। এতে জুয়েলার কারিগর সমিতির সভাপতি সুরেশ দাস আহত হয়।

ঝালকাঠি পুলিশ সুপার মোঃ জোবায়েদুর রহমান সময়ের কণ্ঠস্বরকে  বলেন, একজন মহিলাসহ ডাকাত চক্রের ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে একটি চাপাতি, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও বোমা তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদের পুরো বিষয়টি বিস্তারিত জানানো হবে বলে তিনি জানান। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুর রকিব, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মকবুল হোসেন ও ওসি মাহেআলম উপস্থিত ছিলেন।