স্বাস্থ্য কথা

09-11-2016 09:29:15 AM

ক্রেতা সাধারণ সাবধান ॥ চা এর নামে কি খাচ্ছেন

newsImg

তানজিল শরীফ:ভেজাল চা ব্যবসায়ীদের প্রতি কঠোর হচ্ছে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের পাকড়াও শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি ভেজাল চা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে বিপুল পরিমান ভেজাল চা, ভেজাল চা তৈরীর উপকরণ উদ্ধার করে তা বিনষ্ট করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে মালিকদের। ভবিষ্যতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছেন।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্র জানায়, সাধারন কাঠের গুড়ার সাথে কালো রং এবং অল্প পরিমান ভালো চা মিশিয়ে ভেজাল চা তৈরী করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এ ভেজাল চা কখনো কখনো সাদা পলিথিনে ভরে খুচরা টি স্টল গুলোতে সরবরাহ করা হয়। আবার কখনো কখনো নামী বেনামী চা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের চা এর প্যাকেটের অনুরূপ প্যাকেট তৈরী করে বিক্রি করা হয়। দামে কম হওয়ায় টি স্টলের দোকানীরা এসব চা কিনে ক্রেতা সাধারণকে পরিবেশন করে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরণের প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। গোপণে অনুসন্ধান চলতে থাকে। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে মঙ্গলবার, ০৮ নভেম্বর, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে ফরিদপুর জেলা শহরের পশ্চিম খাবাসপুর বটতলা ভেজাল চা উৎপাদনকারী হারুনের দোকানে অভিযান চালানো হয়। ছোট্ট মুদি দোকানের আড়ালে দোকানের ভিতর দিয়ে আরো একটি কক্ষের সন্ধান পাওয়া যায়। ভ্রাম্যমান আদালতের চৌকস কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা গোপন কক্ষের পেছনে আরো একটি কক্ষের সন্ধান পান। সেখানে মজুদ করা ভেজাল চা, অবৈধ পলিথিন এবং নিষিদ্ধ সেক্সের সিরাপ ও ট্যাবলেট উদ্ধার করেন। অভিযানে উদ্ধারকৃত ভেজাল চাসহ অন্যান্য অবৈধ দ্রব্যাদি বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ পারভেজ মল্লিকের নির্দেশে বিনষ্ট করা হয়। ভেজাল চা উৎপাদন তথা প্রক্রিয়াজাতকারী দোকানদার হারুন অর রশিদকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এরআগে  শহরের টেপাখোলায় একটি ভেজাল চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালান বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ পারভেজ মল্লিকের ভ্রাম্যমান আদালত। কনফেকশনারী ব্যবসার আড়ালে জনৈক মেহেদী হাসান ভেজাল চা প্রস্তুত করে আসছিল। অভিযানে অসাধু ব্যবসায়ী মেহেদী হাসানকে আটক করে জিজ্ঞসাবাদ করলে সে পুরোপুরি অস্বীকার করে। পরে তাকে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত ভেজাল চা প্রস্তুতের কারখানায় নিয়ে গেলে সে তার অপরাধ স্বীকার করে। কয়েক বস্তা ভেজাল চাসহ ঢাকার একটি কোম্পানীর নামে প্রস্তুতকৃত প্রচুর পরিমান চা এর খালি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ পারভেজ মল্লিকের নির্দেশে উদ্ধারকৃত মালামাল বিনষ্ট করা হয় এবং ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্র জানায়, এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপরাধীদের জন্য ফরিদপুর জেলা প্রশাসন কোন ছাড় দিতে রাজি নয়। এছাড়া এধরণের ভেজাল চাসহ নানা অনিয়মকারীদের ব্যাপারে তথ্য প্রদানের জন্যও ভ্রাম্যমান আদালত আহবান জানান।

এ প্রতিবেদক কথা বলেছেন প্রসিদ্ধ এক চা ব্যবসায়ীর সাথে। তিনি তার অভিজ্ঞতা থেকে ভেজাল এবং আসল চা চেনার উপায় জানিয়েছেন। প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী জানান, ভালো চা এর পাতি থেকে দ্রুত চা তৈরী হয় না, একটু সময় লাগে। এছাড়া ভালো চা এর পাতি ঠান্ডা পানিতে যতক্ষনই রাখা হোক তা থেকে চা এর রং আসবে না। অন্যদিকে ভেজাল চা পানিতে দেয়ার সাথে সাথেই পানিতে রং চলে আসে। তিনি বলেন, টি স্টল গুলো সাধারনত অতি দ্রুত চা তৈরী এবং অধিক মুনাফার জন্য ভেজাল চা পরিবেশন করে থাকে। ভেজাল চা এর দামও কম আবার উৎপাদনও বেশি হয় বলে তিনি জানান।