বাংলাদেশ | শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ | ১৫ চৈত্র,১৪৩০

আন্তর্জাতিক

04-01-2018 02:55:58 PM

যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান তীব্র বাদানুবাদ, উত্তেজনা

newsImg

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বেশ জটিল সমীকরণে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সমালোচনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটের পর এবার বিতর্কে জড়িয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত দুই দেশের কর্মকর্তারা। আর ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর পাকিস্তানের শীর্ষ রাজনীতিবিদেরা।জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত নিকি হ্যালি পাকিস্তানের ‘দ্বিমুখী আচরণের’ সমালোচনা করেছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের দূত মালিহা লোধি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে পারে পাকিস্তান।কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কে অবনতি ঘটছে। ট্রাম্পের আগে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন।২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার পর থেকে দেশটির ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ অন্যতম মিত্র দেশ পাকিস্তান। কিন্তু কয়েক মাস ধরে মার্কিন কর্মকর্তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে আসছেন। সোমবার টুইটার বার্তায় ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘বোকার মতো’ গত ১৫ বছরে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার সাহায্য দিয়েছে পাকিস্তানকে। এর বিনিময়ে তারা ‘মিথ্যা এবং প্রতারণা’ ছাড়া আর কিছুই দেয়নি।এর জবাবে মার্কিন দূতকে তলব করে ট্রাম্পের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দাবি করে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এ ধরনের মন্তব্যে বেশ উচ্ছ্বসিত দেশটির দুই প্রতিবেশী ভারত ও আফগানিস্তান। তবে আরেক প্রতিবেশী চীনকে পাশে পাচ্ছে পাকিস্তান। তাদের মতে, রেকর্ড বলছে, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

নিকি হ্যালি মঙ্গলবার বলেন, ‘পাকিস্তান এক দিকে আমাদের সহযোগিতা করছে, আবার এমন সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে যারা আফগানিস্তানে আমাদের সেনাদের ওপর হামলা চালায়।’ তিনি বলেন, পাকিস্তানকে চাপে রাখতে শিগগিরই নতুন কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করবে যুক্তরাষ্ট্র। আর সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, ইসলামাবাদ যদি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তা অব্যাহতভাবে পেতে চায় তবে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আর বেশি ভূমিকা রাখতে সক্ষম। আমরাও পাকিস্তানের সেই ভূমিকা চাই।’

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানায়, মার্কিন কর্মকর্তাদের আক্রমণাত্মক বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের দূত মালিহা লোধি। তিনি গতকাল বুধবার গণমাধ্যমের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অধিকাংশ লড়াইয়ে পাকিস্তানের অবদান এবং আত্মত্যাগ রয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের ভূমিকা যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের ওপর নয়, বরং পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থ ও নীতির ওপর নির্ভর করে।

যদি পাকিস্তানের ভূমিকার যথাযথ মূল্যায়ন না করা হয়, তবে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে পারে বলে জানান লোধি।

গতকাল ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেন, সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া-সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিকে সরকার থোড়াই কেয়ার করে। নওয়াজ জানান, তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আবাসিকে পরামর্শ দেবেন এমন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে যাতে করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তার আর প্রয়োজনই পড়বে না।

আর মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর তাঁর দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাহায্য বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্য তাদের কাছে ‘একেবারে অভাবনীয়’। কারণ তাঁর মন্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পাকিস্তানের দাবি, ২০০৩ সাল থেকে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে পাকিস্তান ৬২ হাজারের বেশি প্রাণ হারিয়েছে। ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।

আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ টুইট করে বলেছেন, পাকিস্তানকে দেওয়া অর্থ সহায়তা সম্পর্কে ট্রাম্পের যদি কোনো সন্দেহ থাকে তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া করতে পারেন। তারা খতিয়ে দেখবে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার কোথায় কোথায় ব্যয় হয়েছে।

খবরটি সংগ্রহ করেনঃ- আই-নিউজ২৪.কম
এই খবরটি মোট ( 317 ) বার পড়া হয়েছে।
add

Share This With Your Friends