বাংলাদেশ | শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ | ১৪ চৈত্র,১৪৩০

অর্থনীতি

05-12-2016 10:45:19 AM

পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে ৭৯৬ শতাংশ

newsImg

ধীরে ধীরে হারানো রুপে ফিরছে দেশের পুঁজিবাজার। ২০১০ সালের ধস পরবর্তী সময় থেকে টানা দর পতনে প্রায় সব শ্রেনীর বিনিয়োগকারীরাই বাজারের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় যেন বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। ফলে বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রায় সব শ্রেনীর বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। পিছিয়ে নেই বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা। শতাংশ হিসেবে যা ৭৯৬ শতাংশ। চলতি বছরের নভেম্বরে এর আগের মাস অক্টোবরের তুলনায় বিদেশী নীট বিনিয়োগ ২৭ শতাংশ কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ডিএসইতে চলতি বছরের ১১ মাসে ডিএসইতে বিদেশী ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের নিট বিনিয়োগ হয়েছে ৯৫৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১০৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। বিদেশি পোর্টফোলিওতে মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৭৯৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা এর আগের বছর ছিল ৬ হাজার ৭৭২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ সময়ে শেয়ার ক্রয় হয়েছে ৪ হাজার ৩৭৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। যা এর আগের বছর ছিল ৬ হাজার ৭৭২ কোটি ২০ লাখ টাকা। গত বছর যা ছিল ৩ হাজার ৪৩৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আর ১১ মাসে ৩ হাজার ৪২১ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে বিদেশিরা। গত বছর যা ছিল ৩ হাজার ৩৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। তবে মাসওয়ারি তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যায়, চলতি বছরের নভেম্বরে এর আগের মাস অক্টোবরের তুলনায় বিদেশী বিনিয়োগ কমেছে। চলতি বছরের ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) বিদেশীদের নীট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৮০০ কোটি ৪৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ১১ মাসে (জানুয়ারি-নভেম্বর) তা ৯৫৫ কোটি ২৫ লাখ ২৮ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। সে হিসেবে নভেম্বরে নীট বিনিয়োগের পরিমাণ ১৫৪ কোটি ৭৭ লাখ ৭২ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। অথচ অক্টোবর মাসে তা ছিল ২১৩ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে তা ৫৮ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা কমেছে। একইভাবে এই এক মাসের ব্যবধানে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। অক্টোবরে বিদেশীদের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৩৬ কোটি ৫৬ লাখ ৮ হাজার টাকা। অথচ নভেম্বরে তা ৬৬৩ কোটি ৭১ লাখ ৯৭ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। সে হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ৭২ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। শতাংশ হিসেবে যা ২৭.৪১ শতাংশ। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার আভাস মিলছে। ব্যাংকের বিনিয়োগের সীমা সমন্বয় বিষয়ে জটিলতা কেটে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মহলের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে দেশের চাইতে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বেশি পুঁজিবাজারে সক্রিয় হয়েছেন। যার কারণে চলতি বছরের ১১ মাসে বিদেশী লেনদেন বেড়েছে। বিশেষ করে বিদেশী বা প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে শেয়ার কেনার পরিমাণ বেড়েছে । তারা মনে করছেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে সব ধরণের সূচক এখন ইতিবাচক। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারের সব সূচকও ইতিবাচক অবস্থানে। দেশের প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হারসহ সার্বিক পরিস্থিতি দেখে বিদেশিরা মার্কেটে এগিয়ে আসছে। তাতে বিনিয়োগ বাড়ছে। তবে এতে খুব বেশি খুশি না হয়ে ভবিষ্যতে আরও বেশি সতর্কও থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কারন হিসেবে তারা বলেন, ইতিমধ্যে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে নীট বিনিয়োগ কমে গেছে। হয়তো ভবিষ্যতে তা আরও বেড়েও যেতে পারে। তারা আরও বলেন, টাকার বিপরীতে ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এবং শেয়ারের দর নেমে যাওয়ায় মুনাফার আশায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে ঝুঁকছেন। কিন্তু তারা কোনো কারণে চলে গেলে তা বাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। 

খবরটি সংগ্রহ করেনঃ- আই-নিউজ২৪.কম
এই খবরটি মোট ( 672 ) বার পড়া হয়েছে।
add

Share This With Your Friends